ঢাকা ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞাপনদাতারা বিমুখ, এক্স কি দেউলিয়ার পথে?

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ১৯৪ বার পড়া হয়েছে

সামাজিক ব্লগ এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিকানা হাতে নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক সমালোচনার মুখে রয়েছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। সর্বশেষ ইহুদিবিদ্বেষ বিতর্কের জের ধরে এক্স থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বড় বড় বিজ্ঞাপনদাতারা। এতে উপার্জন এতটাই কমেছে যে, সামনে কর্মীদের বেতনাদি বিশেষ করে কোম্পানির ঋণ শোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে মাস্কের। তবে কি দেউলিয়াত্বের পথে চলছে ইলন মাস্কের এক্স!

গাজায় ইসরায়েলি হামলা-সংঘাতের জের ধরে যখন বিশ্বজুড়েই ইহুদিবিদ্বেষের উত্তাপ, ঠিক তখন ইলন মাস্কের বিরুদ্ধেও উঠেছে এক্সে ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্যে সায় জানানোর অভিযোগ।

এক্সে সম্প্রতি কেউ একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন ইহুদিরা’। তাতে মন্তব্যের ঘরে গিয়ে মাস্ক লিখেছেন, ‘ঘটনা সত্য’।

এতেই ক্ষেপে যায় গাজাযুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়া আমেরিকা। খোদ হোয়াইট হাউস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ‘ইহুদিবিদ্বেষ ও বর্ণবাদী ঘৃণার প্রচার একটি ঘৃণ্য আচরণ। এই আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মূল্যবোধের পরিপন্থী।’

শুধু তাই নয়, ইহুদিবাদী সংগঠন ‘মিডিয়া ম্যাটারস ফর আমেরিকা’ আরও একধাপ বেড়ে অভিযোগ তুলে, ইলন মাস্কের ইহুদিবিদ্বেষী সাইটে মার্কিন করপোরেটরা অর্থায়ন করছে, ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্যের সঙ্গেই ঝুলছে তাদের বিজ্ঞাপন।

মিডিয়া ম্যাটারসের এমন ইঙ্গিতে নড়েচড়ে বসে মার্কিন করপোরেট কোম্পানিগুলো। এ ঘটনার পরদিনই আইবিএম ঘোষণা দেয়, তারা এক্স থেকে বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।

এরপরই বিজ্ঞাপন তুলে নেওয়ার হিড়িক লাগে। একে একে ডিজনি, অ্যাপল, ওরাকল করপোরেশন, কমসাট, প্যারামাউন্ট, ডিসকভারি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশির ভাগই এক্স থেকে বিজ্ঞাপন তুলে নেয়।

সর্বশেষ গত শুক্রবার খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টও ঘোষণা করেছে, এক্স-এ তারা আর বিজ্ঞাপন দিচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ে ধস নেমেছে ইলন মাস্কের এক্সে। বিজ্ঞাপন গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মাইক্রোব্লগটির আয়ের ৯০ ভাগই আসে বিজ্ঞাপন থেকে।

ইনসাইডার ইন্টেলিজেন্স জানায়, ২০২২ সালে টুইটারের বিজ্ঞাপনের আয় ছিল প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার। সেখানে চলতি বছর আয়ে নেমে এসেছে, এবার বড়জোর ১.৯ বিলিয়ন ডলার আসতে পারে।

এখন এভাবে যদি বিজ্ঞাপনদাতারা চলে যেতে থাকে এবং ফিরে না আসে, তাহলে কি সত্যিই এক্স দেউলিয়া হয়ে যাবে?

বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইলন মাস্ক নিজেই। গত বুধবার এক সাক্ষাৎকারে ইলন মাস্ক ইঙ্গিত দিয়েছেন দেউলিয়াত্বের। তিনি ‘বি’ শব্দটি ব্যবহার করেন যা দিয়ে দেউলিয়াত্ব, বিজ্ঞাপন বয়কট ইত্যাদি বুঝায়।

ইলন মাস্ক বলেন, যদি কোম্পানি ব্যর্থ হয়… এটি বিজ্ঞাপনদাতাদের বয়কটের কারণে ব্যর্থ হবে। এটিই কোম্পানিকে দেউলিয়া করে দেবে।

স্পেস এক্স কোম্পানির মালিক ইলন মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে সাবেক টুইটার কিনে নিয়েছিলেন, পরে যার নাম বদল করে রাখেন এক্স।

উপার্জনে ধসের শিকার এক্সের দুটি প্রধান ব্যয় রয়েছে। প্রথমটি হল কর্মীদের বিল। এরইমধ্যে ইলন মাস্ত হাজার হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন। তাতে কর্মীদের বাবদ ব্যয় কিছুটা কমেছে।

দ্বিতীয় ব্যয়টি হল মাস্ক টুইটার কেনার জন্য যে ঋণ নিয়েছিলেন, সেটি। মোট ১৩ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিপরিতে এক্সকে প্রতি বছর ১.২ বিলিয়ন বা তার বেশি দিতে হচ্ছে।

যদি কোম্পানীটি তার ঋণের সুদ প্রদান করতে না পারে বা কর্মীদের বেতনাদি দিতে না পারে তাহলে, সত্যিই দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে এক্স।

তবে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক সেটি কীভাবে ঠেকাবেন, সময় তা বলে দেবে। আর অবশ্যই তেমনটি ঘটতে দেবেন না মাস্ক।’হহহ

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

বিজ্ঞাপনদাতারা বিমুখ, এক্স কি দেউলিয়ার পথে?

আপডেট সময় ০৮:৩৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

সামাজিক ব্লগ এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিকানা হাতে নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক সমালোচনার মুখে রয়েছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। সর্বশেষ ইহুদিবিদ্বেষ বিতর্কের জের ধরে এক্স থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বড় বড় বিজ্ঞাপনদাতারা। এতে উপার্জন এতটাই কমেছে যে, সামনে কর্মীদের বেতনাদি বিশেষ করে কোম্পানির ঋণ শোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে মাস্কের। তবে কি দেউলিয়াত্বের পথে চলছে ইলন মাস্কের এক্স!

গাজায় ইসরায়েলি হামলা-সংঘাতের জের ধরে যখন বিশ্বজুড়েই ইহুদিবিদ্বেষের উত্তাপ, ঠিক তখন ইলন মাস্কের বিরুদ্ধেও উঠেছে এক্সে ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্যে সায় জানানোর অভিযোগ।

এক্সে সম্প্রতি কেউ একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন ইহুদিরা’। তাতে মন্তব্যের ঘরে গিয়ে মাস্ক লিখেছেন, ‘ঘটনা সত্য’।

এতেই ক্ষেপে যায় গাজাযুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়া আমেরিকা। খোদ হোয়াইট হাউস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ‘ইহুদিবিদ্বেষ ও বর্ণবাদী ঘৃণার প্রচার একটি ঘৃণ্য আচরণ। এই আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মূল্যবোধের পরিপন্থী।’

শুধু তাই নয়, ইহুদিবাদী সংগঠন ‘মিডিয়া ম্যাটারস ফর আমেরিকা’ আরও একধাপ বেড়ে অভিযোগ তুলে, ইলন মাস্কের ইহুদিবিদ্বেষী সাইটে মার্কিন করপোরেটরা অর্থায়ন করছে, ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্যের সঙ্গেই ঝুলছে তাদের বিজ্ঞাপন।

মিডিয়া ম্যাটারসের এমন ইঙ্গিতে নড়েচড়ে বসে মার্কিন করপোরেট কোম্পানিগুলো। এ ঘটনার পরদিনই আইবিএম ঘোষণা দেয়, তারা এক্স থেকে বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।

এরপরই বিজ্ঞাপন তুলে নেওয়ার হিড়িক লাগে। একে একে ডিজনি, অ্যাপল, ওরাকল করপোরেশন, কমসাট, প্যারামাউন্ট, ডিসকভারি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশির ভাগই এক্স থেকে বিজ্ঞাপন তুলে নেয়।

সর্বশেষ গত শুক্রবার খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টও ঘোষণা করেছে, এক্স-এ তারা আর বিজ্ঞাপন দিচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ে ধস নেমেছে ইলন মাস্কের এক্সে। বিজ্ঞাপন গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মাইক্রোব্লগটির আয়ের ৯০ ভাগই আসে বিজ্ঞাপন থেকে।

ইনসাইডার ইন্টেলিজেন্স জানায়, ২০২২ সালে টুইটারের বিজ্ঞাপনের আয় ছিল প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার। সেখানে চলতি বছর আয়ে নেমে এসেছে, এবার বড়জোর ১.৯ বিলিয়ন ডলার আসতে পারে।

এখন এভাবে যদি বিজ্ঞাপনদাতারা চলে যেতে থাকে এবং ফিরে না আসে, তাহলে কি সত্যিই এক্স দেউলিয়া হয়ে যাবে?

বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইলন মাস্ক নিজেই। গত বুধবার এক সাক্ষাৎকারে ইলন মাস্ক ইঙ্গিত দিয়েছেন দেউলিয়াত্বের। তিনি ‘বি’ শব্দটি ব্যবহার করেন যা দিয়ে দেউলিয়াত্ব, বিজ্ঞাপন বয়কট ইত্যাদি বুঝায়।

ইলন মাস্ক বলেন, যদি কোম্পানি ব্যর্থ হয়… এটি বিজ্ঞাপনদাতাদের বয়কটের কারণে ব্যর্থ হবে। এটিই কোম্পানিকে দেউলিয়া করে দেবে।

স্পেস এক্স কোম্পানির মালিক ইলন মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে সাবেক টুইটার কিনে নিয়েছিলেন, পরে যার নাম বদল করে রাখেন এক্স।

উপার্জনে ধসের শিকার এক্সের দুটি প্রধান ব্যয় রয়েছে। প্রথমটি হল কর্মীদের বিল। এরইমধ্যে ইলন মাস্ত হাজার হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন। তাতে কর্মীদের বাবদ ব্যয় কিছুটা কমেছে।

দ্বিতীয় ব্যয়টি হল মাস্ক টুইটার কেনার জন্য যে ঋণ নিয়েছিলেন, সেটি। মোট ১৩ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিপরিতে এক্সকে প্রতি বছর ১.২ বিলিয়ন বা তার বেশি দিতে হচ্ছে।

যদি কোম্পানীটি তার ঋণের সুদ প্রদান করতে না পারে বা কর্মীদের বেতনাদি দিতে না পারে তাহলে, সত্যিই দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে এক্স।

তবে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক সেটি কীভাবে ঠেকাবেন, সময় তা বলে দেবে। আর অবশ্যই তেমনটি ঘটতে দেবেন না মাস্ক।’হহহ


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/youthbangla24/public_html/wp-includes/functions.php on line 5420