ঢাকা ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাবতলীতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহের মেলা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:১১:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৪১ বার পড়া হয়েছে

মেলায় ওঠা ১২ কেজি ওজনের কাতল

যে মেলায় মাছ কিনতে প্রতিযোগিতায় নামেন জামাইরা

Bengal

 

অন্তত চারশো বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বগুড়ার গাবতলীতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহের মেলা। সন্নাসী পূজার মেলা হিসেবে এটির যাত্রা শুরু হলেও কালের বিবর্তনে এটি পোড়াদহ মাছের মেলা এবং জামাই মেলা হিসেবে পরিচিত লাভ করে। একদিন ব্যাপি এ মেলার প্রধান আকর্ষণ বিভিন্ন প্রজাতির বিশাল আকৃতির মাছ। মেলা উপলক্ষে আশপাশের কয়েক গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে জামাই সমাগম, অতিথি আপ্যায়ন ছাড়াও ও নানা আনন্দ উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারও দূর দূরান্ত থেকে আসা হাজারো মানুষের ভীড়ে মুখোরিত মেলা প্রাঙ্গন। কেবল বগুড়া নয় অতি প্রাচীন পোড়াদহের এই মেলায় মাছ কিনতে ও দেখতে সারাদিন সেখানে ভীড় করে দূরদূরান্তের হাজারো মানুষ। প্রতিবছর মাঘের শেষ বুধবার এই মেলার আয়োজন করা হয়।

প্রতিবছরের মতো এবারো বগুড়া ছাড়াও উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো মানুষ এসেছে পোড়াদহ মেলা প্রাঙ্গনে।

ছেলে-বুড়ো সকলেই কাকডাকা ভোর থেকে দল বেঁধে মাছ-মিষ্টি বেচা-কেনার উৎসবে মেতেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইছামতি নদীর তীরে বিস্তৃর্ণ মাঠে বাড়তে থাকে মানুষ। কেবল বিশাল আকৃতির মাছই নয় একশো একর জমি জুড়ে আয়োজন করা এই মেলায় নাগোরদোলা, সার্কাস, বাহারী সব মিষ্টিসহ সংসারের খুটিনাটির পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা।

পোড়াদহ মেলায় ৮২ কেজি ওজনের বাঘা আইড় মাছ

স্থানীয়রা জানান, গাবতলির অন্তত ৩০ গ্রামে বছরের এই দিনটিকে বিশেষ দিন হিসেবে পালন করতে মেয়ে-মেয়ে জামাই, আত্মীয়-স্বজনদের জানানো হয় আমন্ত্রণ। ঈদ-পূজো-পার্বনের মতোই সব ধর্মের লোকেরা নতুন জামা-কাপড়, পিঠা-পুলি আর বিশাল আকারের মাছ-ভাতে কয়েকদিন মাতেন এই উৎসবে।

radhuni

 

সাতসকালেই ইছামতী নদীর তীরে মানুষের ঢল। নদীর তীরে ছিল ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। দূরদূরান্ত থেকে দল বেঁধে লোকজন মেলায় ছুটে আসছেন। মেলা উপলক্ষে আশপাশের ৩০ গ্রামে রীতিমতো উৎসবের আমেজ। গৃহস্থ ঘরে নাইওর এসেছে নববধূ আর মেয়ে জামাই। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় অন্যবারের মতো এবারও মেলায় উঠেছে নদীতে ধরা হরেক প্রজাতির বিশাল বিশাল মাছ। প্রতিবছর দুই থকে আড়াইমণ ওজনের বাঘাইড় মাছ এই মেলার প্রধান আকর্ষণ হলেও প্রশাসনিক নিষেধাঞ্জার কারণে এবারও মেলায় ছিলনা কোনো বাঘাইড়। তবে আকর্ষণ হিসেবে ছিল প্রায় ৪০ কেজি ওজনের সামুদ্রিক পাখি মাছ।

টাঙ্গাইলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাছ বিক্রেতা জানান, পাখি মাছটি কুয়াকাটা হতে মেলায় নিয়ে এসেছেন। মাছটির প্রতিকেজি ১৫ শত টাকা দরে বিক্রি করার জন্য দাম হাকাচ্ছেন তিনি। তবে দর্শনার্থীদের অনেকেই মাছটি দেখলেও আশানুরূপ দাম না বলায় বিক্রি হয়নি।

প্রায় ৪শ’ বছর আগে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সন্ন্যাসীরা বগুড়ার গাবতলী উপজেলার গাড়ীদহ নদী ঘেঁষে আস্তানা গাড়েন। এর প্রায় ৫০ বছর পর স্থানীয়রা এখানে সন্ন্যাসী পূজার পাশাপাশি গোড়াপত্তন করেন ঐতিহ্যবাহী এই মেলার। সেই থেকে প্রতিবছর মেলাটি মাঘ মাসের শেষ বুধবারে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এ মেলাটির সর্বজনীন মেলা হিসেবে বগুড়াসহ আশপাশে জেলায় বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।

 

মেলাতে আসা ক্রেতা বিক্রেতা ও দর্শনার্থীরা জানান, মেলায় শিশুদের জন্য খেলাধূলার সামগ্রী ছাড়াও রয়েছে হরেক রকমের খাবারের দোকান। ছাড়াও প্রসাধনী সামগ্রীর পাশাপাশি মূল আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বিশাল আকৃতির মাছের সরবরাহ। অনেকে এই মেলাকে বলেন, মাছের মেলা। আর সকাল থেকে মেলায় ভীড় জমান বগুড়াসহ আশপাশের জেলার মানুষ।

জানা যায়, প্রতি বছরের মাঘ মাসের শেষ বুধবার প্রথম দিকে সন্নাসী মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এই মেলা। কালের বিবর্তনে হয়ে ওঠে পূর্ব বগুড়াবাসীর মিলনমেলা। পোড়াদহ নামকস্থানে হয় বলে এ মেলার নাম হয়ে যায় পোড়াদহ মেলা। আবার অনেকেই এটাকে জামাই মেলা বলেও অভিহিত করেন। মেলাকে ঘিরে আশপাশে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে। এ কারণে স্থানীয়রা আবার এ মেলাকে জামাই মেলাও বলে থাকে অনেকেই।

এবার সর্বোচ্চ ৩০ কেজির কাতল ছাড়াও বিশাল আকৃতির বোয়াল, রুইসহ হরেক রকম মাছ নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা যার কোনটি ৩৫ কোনটির দাম হাঁকা হয় ৪০ হাজারেরও বেশি। মাছের আদলে তৈরি ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের বাহারী মিষ্টিও মেলে এখানে। এক দিনের এই মেলায় প্রায় শত কোটি টাকার বেচাকেনা হয় প্রতি বছর।

 

যে মেলায় মাছ কিনতে প্রতিযোগিতায় নামেন জামাইরা

ঐতিহ্যবাহী এই মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মজিদ আরও জানান, এই মেলাকে ঘিরে যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয় পুরো এলাকায়, তা অনেকক্ষেত্রে ঈদেও পূজোর আনন্দকেও ছাড়িয়ে যায়। মেলায় বড় বড় মাছের সমারোহ ছাড়াও মিষ্টি, কাঠের আসবাবপত্রসহ শিশুদের বিনোদনের জন্য ব্যবস্থা করা হয় প্রতিবছরই। মেলা আয়াজনকে এলাকার ঐতিহ্য রক্ষার জন্য এলাকাবাসীর সম্মিলিত উদ্যোগ বলেই দাবি এই আয়োজকের।

গাবতলীর বাগবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, মেলায় আগত ক্রেতা বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েনসহ সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেলার মাঠে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা ছাড়াও সার্বক্ষণিক পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ মেলা প্রাঙ্গণে বিচরণ করছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত যাতে না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রয়েছে।

ইতিহাসবিদ প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুর রহিম বগরা বলেন, ভৌগোলিকভাবে পেড়াদহ মেলার এ স্থানটি একটি প্লাবনভূমি এবং এটি নদী, খাল ও বিলের মোহনা অঞ্চলে অবস্থিত। এখান থেকে বেশ কাছেই রানীরপাড়া কাতলাহার বিল ও ঢিলেগারা বিলসহ পোড়াদহ খাল ও মরা বাঙালী নদী। প্রায় একশ একর জমির ওপর এই মেলায় বগুড়াসহ আশপাশের জেলার প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ দর্শনার্থী, ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম ঘটে।

Nagad
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

গাবতলীতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহের মেলা

আপডেট সময় ০১:১১:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

যে মেলায় মাছ কিনতে প্রতিযোগিতায় নামেন জামাইরা

Bengal

 

অন্তত চারশো বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বগুড়ার গাবতলীতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহের মেলা। সন্নাসী পূজার মেলা হিসেবে এটির যাত্রা শুরু হলেও কালের বিবর্তনে এটি পোড়াদহ মাছের মেলা এবং জামাই মেলা হিসেবে পরিচিত লাভ করে। একদিন ব্যাপি এ মেলার প্রধান আকর্ষণ বিভিন্ন প্রজাতির বিশাল আকৃতির মাছ। মেলা উপলক্ষে আশপাশের কয়েক গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে জামাই সমাগম, অতিথি আপ্যায়ন ছাড়াও ও নানা আনন্দ উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারও দূর দূরান্ত থেকে আসা হাজারো মানুষের ভীড়ে মুখোরিত মেলা প্রাঙ্গন। কেবল বগুড়া নয় অতি প্রাচীন পোড়াদহের এই মেলায় মাছ কিনতে ও দেখতে সারাদিন সেখানে ভীড় করে দূরদূরান্তের হাজারো মানুষ। প্রতিবছর মাঘের শেষ বুধবার এই মেলার আয়োজন করা হয়।

প্রতিবছরের মতো এবারো বগুড়া ছাড়াও উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো মানুষ এসেছে পোড়াদহ মেলা প্রাঙ্গনে।

ছেলে-বুড়ো সকলেই কাকডাকা ভোর থেকে দল বেঁধে মাছ-মিষ্টি বেচা-কেনার উৎসবে মেতেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইছামতি নদীর তীরে বিস্তৃর্ণ মাঠে বাড়তে থাকে মানুষ। কেবল বিশাল আকৃতির মাছই নয় একশো একর জমি জুড়ে আয়োজন করা এই মেলায় নাগোরদোলা, সার্কাস, বাহারী সব মিষ্টিসহ সংসারের খুটিনাটির পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা।

পোড়াদহ মেলায় ৮২ কেজি ওজনের বাঘা আইড় মাছ

স্থানীয়রা জানান, গাবতলির অন্তত ৩০ গ্রামে বছরের এই দিনটিকে বিশেষ দিন হিসেবে পালন করতে মেয়ে-মেয়ে জামাই, আত্মীয়-স্বজনদের জানানো হয় আমন্ত্রণ। ঈদ-পূজো-পার্বনের মতোই সব ধর্মের লোকেরা নতুন জামা-কাপড়, পিঠা-পুলি আর বিশাল আকারের মাছ-ভাতে কয়েকদিন মাতেন এই উৎসবে।

radhuni

 

সাতসকালেই ইছামতী নদীর তীরে মানুষের ঢল। নদীর তীরে ছিল ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। দূরদূরান্ত থেকে দল বেঁধে লোকজন মেলায় ছুটে আসছেন। মেলা উপলক্ষে আশপাশের ৩০ গ্রামে রীতিমতো উৎসবের আমেজ। গৃহস্থ ঘরে নাইওর এসেছে নববধূ আর মেয়ে জামাই। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় অন্যবারের মতো এবারও মেলায় উঠেছে নদীতে ধরা হরেক প্রজাতির বিশাল বিশাল মাছ। প্রতিবছর দুই থকে আড়াইমণ ওজনের বাঘাইড় মাছ এই মেলার প্রধান আকর্ষণ হলেও প্রশাসনিক নিষেধাঞ্জার কারণে এবারও মেলায় ছিলনা কোনো বাঘাইড়। তবে আকর্ষণ হিসেবে ছিল প্রায় ৪০ কেজি ওজনের সামুদ্রিক পাখি মাছ।

টাঙ্গাইলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাছ বিক্রেতা জানান, পাখি মাছটি কুয়াকাটা হতে মেলায় নিয়ে এসেছেন। মাছটির প্রতিকেজি ১৫ শত টাকা দরে বিক্রি করার জন্য দাম হাকাচ্ছেন তিনি। তবে দর্শনার্থীদের অনেকেই মাছটি দেখলেও আশানুরূপ দাম না বলায় বিক্রি হয়নি।

প্রায় ৪শ’ বছর আগে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সন্ন্যাসীরা বগুড়ার গাবতলী উপজেলার গাড়ীদহ নদী ঘেঁষে আস্তানা গাড়েন। এর প্রায় ৫০ বছর পর স্থানীয়রা এখানে সন্ন্যাসী পূজার পাশাপাশি গোড়াপত্তন করেন ঐতিহ্যবাহী এই মেলার। সেই থেকে প্রতিবছর মেলাটি মাঘ মাসের শেষ বুধবারে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এ মেলাটির সর্বজনীন মেলা হিসেবে বগুড়াসহ আশপাশে জেলায় বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।

 

মেলাতে আসা ক্রেতা বিক্রেতা ও দর্শনার্থীরা জানান, মেলায় শিশুদের জন্য খেলাধূলার সামগ্রী ছাড়াও রয়েছে হরেক রকমের খাবারের দোকান। ছাড়াও প্রসাধনী সামগ্রীর পাশাপাশি মূল আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বিশাল আকৃতির মাছের সরবরাহ। অনেকে এই মেলাকে বলেন, মাছের মেলা। আর সকাল থেকে মেলায় ভীড় জমান বগুড়াসহ আশপাশের জেলার মানুষ।

জানা যায়, প্রতি বছরের মাঘ মাসের শেষ বুধবার প্রথম দিকে সন্নাসী মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এই মেলা। কালের বিবর্তনে হয়ে ওঠে পূর্ব বগুড়াবাসীর মিলনমেলা। পোড়াদহ নামকস্থানে হয় বলে এ মেলার নাম হয়ে যায় পোড়াদহ মেলা। আবার অনেকেই এটাকে জামাই মেলা বলেও অভিহিত করেন। মেলাকে ঘিরে আশপাশে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে। এ কারণে স্থানীয়রা আবার এ মেলাকে জামাই মেলাও বলে থাকে অনেকেই।

এবার সর্বোচ্চ ৩০ কেজির কাতল ছাড়াও বিশাল আকৃতির বোয়াল, রুইসহ হরেক রকম মাছ নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা যার কোনটি ৩৫ কোনটির দাম হাঁকা হয় ৪০ হাজারেরও বেশি। মাছের আদলে তৈরি ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের বাহারী মিষ্টিও মেলে এখানে। এক দিনের এই মেলায় প্রায় শত কোটি টাকার বেচাকেনা হয় প্রতি বছর।

 

যে মেলায় মাছ কিনতে প্রতিযোগিতায় নামেন জামাইরা

ঐতিহ্যবাহী এই মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মজিদ আরও জানান, এই মেলাকে ঘিরে যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয় পুরো এলাকায়, তা অনেকক্ষেত্রে ঈদেও পূজোর আনন্দকেও ছাড়িয়ে যায়। মেলায় বড় বড় মাছের সমারোহ ছাড়াও মিষ্টি, কাঠের আসবাবপত্রসহ শিশুদের বিনোদনের জন্য ব্যবস্থা করা হয় প্রতিবছরই। মেলা আয়াজনকে এলাকার ঐতিহ্য রক্ষার জন্য এলাকাবাসীর সম্মিলিত উদ্যোগ বলেই দাবি এই আয়োজকের।

গাবতলীর বাগবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, মেলায় আগত ক্রেতা বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েনসহ সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেলার মাঠে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা ছাড়াও সার্বক্ষণিক পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ মেলা প্রাঙ্গণে বিচরণ করছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত যাতে না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রয়েছে।

ইতিহাসবিদ প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুর রহিম বগরা বলেন, ভৌগোলিকভাবে পেড়াদহ মেলার এ স্থানটি একটি প্লাবনভূমি এবং এটি নদী, খাল ও বিলের মোহনা অঞ্চলে অবস্থিত। এখান থেকে বেশ কাছেই রানীরপাড়া কাতলাহার বিল ও ঢিলেগারা বিলসহ পোড়াদহ খাল ও মরা বাঙালী নদী। প্রায় একশ একর জমির ওপর এই মেলায় বগুড়াসহ আশপাশের জেলার প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ দর্শনার্থী, ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম ঘটে।

Nagad

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/youthbangla24/public_html/wp-includes/functions.php on line 5420